মার্চ মতিঝিলে হেফাজত কর্মীদের সরাতে পুলিশি অভিযান নিয়ে বিএনপি
সরকারের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য চাওয়ার পর শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের এক প্রেসনোটে এ
কথা বলা হয়।
এতে বলা হয়, মতিঝিলে সমাবেশ চলাকালে হেফাজত কর্মীরা
পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় এবং পল্টন, বায়তুল মোকাররম, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ
ও এর আশপাশের এলাকায় ব্যাপক ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ চালায়, যার নেতৃত্ব দেয়
বিএনপি ও জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা।
“এরপর শেষ বিকালে হেফাজত নেতা
আহমদ শফী লালবাগ মাদ্রাসা থেকে শাপলা চত্বরের সমাবেশস্থলে রওয়ানা হন।
কিন্তু কিছুদূর এসেই তিনি বিএনপির নেতৃত্ব পর্যায় থেকে ফোন পেয়ে শাপলা
চত্বরে না এসে ফিরে যান।”
আহমদ শফী সেদিন না যাওযায় হেফাজত কর্মীরা অবস্থান চালিয়ে যায় এবং ‘নৈরাজ্য ব্যাপক আকার ধারণ করে’ বলে প্রেসনোটে উল্লেখ করা হয়।তাণ্ডব চলতে থাকায় ওই রাতে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি ১৫ মিনিটের এক সাঁড়াশি অভিযানে হেফাজতকর্মীদের শাপলা চত্বর থেকে সরিয়ে দেয়।
ওই অভিযানে ‘হাজার হাজার’ মানুষকে হত্যা করে লাশ ‘গুম’ করার অভিযোগ এনে বুধবার বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের প্রেসনোট চাওয়া হয়।
সরকারের
প্রেসনোটে বলা হয়, “রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক কেন্দ্রে
যখন নজীরবিহীন লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চলছে, তখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে
সংবাদ সম্মেলন করে হেফাজতে ইসলামকে নৈরাজ্য বন্ধ করে সন্ধ্যার আগেই তাদের
প্রতিশ্রুতি মতো শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
কিন্তু হেফাজতের নেতারা তাতে কর্ণপাত করেননি, বরং তারা বেআইনিভাবে
বেপরোয়াভাবে অবস্থান চালিয়ে যেতে থাকে।”
সে সময় নৈরাজ্য প্রতিরোধ ও গণনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অভিযান ‘অপরিহার্’ ছিল বলে উল্লেখ করা হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যায়।
এতে
বলা হয়, মতিঝিলে হেফাজতের সমাবেশ এবং সেখান থেকে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ
চালানোর মধ্যেই রোববার রাতে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা জরুরি বৈঠক করেন।
“বৈঠক
শেষে মাননীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তাদের নেতা কর্মীদেরকে হেফাজতে
ইসলামের কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের আনুষ্ঠানিক নির্দেশ দেন এবং ঢাকা
নগরবাসীকে হেফাজত কর্মীদের সহায়তা প্রদানের জন্য আহ্বান জানান।”
পরদিন সকালে নারাযণগঞ্জে হেফাজত কর্মীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতায় হতাহতের জন্যও বিএনপিকে দায়ী করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সরকারের
ব্যাখ্যায় বলা হয়, অভিযানের মুখে হেফাজত কর্মীরা শাপলা চত্বর থেকে সরে
গিয়ে সোমবার ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান নেয়। সেখানে অবরোধ সৃষ্টি
করে তারা নির্বিচারে রাস্তার পাশে রাখা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করতে থাকে।
বিএনপি ও জামায়াতকর্মীরাও ধ্বংসযজ্ঞে যোগ দেয়।
“তারা সম্মিলিতভাবে
নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর, সাইনবোর্ড, শিমরাইল, সানার পাড়, কোয়েত মার্কেট ও
মাদানীনগর এলাকায় উন্মত্ত ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ করে। মাদানীনগর মাদ্রাসাকে
কেন্দ্র করে আশ-পাশের মসজিদের মাইক ব্যবহার করে উত্তেজনাকর গুজব ছড়িয়ে লোক
জড় করে এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ঝাপিয়ে পড়ে।”
তাদের ‘পরিকল্পিত আক্রমণ’ প্রতিরোধ করতে গিয়ে দুই পুলিশ ও দুই বিজিবি সদস্য নিহত হন।
উন্মত্ত সহিংসতায় সেদিন মোট ১৩ জনের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
No comments:
Post a Comment